সরকারি হাই স্কুল গুলো নিয়ে জানুন মজার কিছু তথ্য

আসসালামুআলাইকুম বন্ধুরা। সবাই কেমন আছেন? আশা করি সবাই ভাল আছেন। মহান আল্লাহর রহমতে আমিও ভালল ওসুস্থ আছি। আজকের এই পর্বে আমরা আলোচনা করব সরকারি হাই স্কুল গুলো আছে সেগুলো নিয়ে। অর্থাৎ সরকারি হাই স্কুল কোন সুবিধা-অসুবিধা। আমরা কি কি সুবিধা পেতে পারি কি কি অসুবিধা রয়েছে সরকারি হাই স্কুল গুলোতে। এই সমস্ত বিষয় নিয়ে এবং হাইস্কুলের বেশকিছু ফ্যাক্টরি আপনার সাথে আলোচনা করবো। তো চলুন কথা না বলে আমরা আজকের আলোচনাটি শুরু করি।

হাই স্কুল কি?

আমরা মোটামুটি সবাই জানি হাই স্কুল কি। আমরা যারা জানে না তাদের উদ্দেশ্য করে বলছি। হাই স্কুল হচ্ছে মূলত একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান যেখানে সিক্স থেকে টেন পর্যন্ত পড়াশোনা করানো হয়। অর্থাৎ ক্লাস সিক্স থেকে দশম শ্রেণী পর্যন্ত যেই বিদ্যালয় ক্লাস করানো হয় বা পড়ানো হয় পরীক্ষা নেওয়া হয় সেই সমস্ত বিদ্যালয় কি মূলত হাই স্কুল বলা হয়। হাই স্কুল মূলত দুই প্রকার হয়ে থাকে। একটি হচ্ছে সরকারি অন্যটি বেসরকারি। আজকে এই দুইটি বিষয় নিয়ে আপনাদের সাথে আলোচনা করব। তাহলে আমরা আলোচনা করি?

সরকারি হাই স্কুল

সরকারি হাইস্কুল বলতে বোঝাচ্ছে সরকার অনুমোদিত এবং সরকার থেকে টিচারদের কে বেতন ভাতা দেওয়া হয় এ সমস্ত স্কুল-কলেজ। অর্থাৎ এমন হাই স্কুল যেগুলো রয়েছে যেগুলো সরাসরি শতভাগ সরকার অনুমোদিত এবং সেখানকার ছাত্রদেরকে বা শিক্ষার্থীদের কে কোন প্রকার বেতন দেওয়ার প্রয়োজন হয় না বরং টিচারদের যেই বেতনটি রয়েছে সেটি সরকার থেকে দেয়া হয়। অর্থাৎ শিক্ষক ও সহকারী থাকি এবং সরকার থেকে বেতন ভাতা এবং পেনশন পায়। সেগুলো মূলত হচ্ছে সরকারি প্রতিষ্ঠান।

সরকারি প্রতিষ্ঠান বা সরকারি হাইস্কুলের যাবতীয় কার্যক্রম গুলো মূলত সরকারিভাবে করা হয়। অর্থাৎ স্কুলের যেকোন ফান্ডের টাকা প্রয়োজন হলে সেটা সরকার থেকে আসে। স্কুলের কোন নতুন বিল্ডিং করার থাকলে বা কনস্ট্রাকশনের যে কোন কাজ থাকলে সেটাও সরকারিভাবে সহায়তা আসে। অর্থাৎ বলতে গেলে সমস্ত স্কুলটিকে একদম সরকারিভাবে কন্ট্রোল করা হয় বা বলতে পারেন সরাসরি সরকার দ্বারা পরিচালিত এমন হাই স্কুল গুলোকে সরকারি হাইস্কুল বলা হয়। এবং কি সরকার দ্বারা পরিচালিত হওয়ার কারণে কিন্তু এখানে শিক্ষার্থীরা বিনামূল্যে পড়ার সুযোগ পায়।

এখানে কিন্তু শিক্ষার্থীদের কে লেখাপড়ার জন্য কোন প্রকার বাড়তি খরচ প্রদান করতে হয় না। এমনকি সরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে যে ক্লাশের বইগুলো রয়েছে সেই বইগুলো কিন্তু সরকারিভাবে বিনামূল্যে বিতরণ করা হয়। অর্থাৎ আপনারা যদি সরকারি হাইস্কুলে পড়ে থাকেন সেক্ষেত্রে আপনার ক্লাস সিক্স থেকে দশম শ্রেণী পর্যন্ত একদম বিনামূল্যে পড়ে আসতে পারবেন। পাশাপাশি এই সমস্ত বিদ্যালয়গুলোতে সরকারিভাবে অনেক সময় অনুদান দিয়ে থাকে। যেমন আমাদের কারো পারিবারিক সমস্যা থাকলে, আমাদের মাঝে কেউ যদি প্রতিবন্ধি থাকে সেই ক্ষেত্রে কিন্তু তারা সরকারিভাবে একটি সহায়তা পায়। আবার সরকারিভাবে দুস্থদের কে কিন্তু উপবৃত্তি দেওয়া হয়।

উপবৃত্তি পাওয়ার জন্য কিন্তু আপনাদেরকে আবেদন করতে হবে। আপনারা যখন উপবৃত্তির জন্য আবেদন করবেন তখন কিন্তু আপনাদের সেটা স্কুল কর্তৃপক্ষ ভেরিফাই করে সরকারের নিকট সাবমিট করে দিবে। তারপর সরকার থেকে কিন্তু আপনাদেরকে 6 মাস পরপর কিছু পরিমান টাকা দেয়া হবে। এগুলো হচ্ছে মূলত সরকারি বিদ্যালয় গুলোর পরিচয় বা বলতে পারেন সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর সুবিধা এগুলোই।

বেসরকারি হাই স্কুল

বেসরকারি হাইস্কুলে আপনাদের যেমন সুবিধা রয়েছে তেমন কিন্তু অসুবিধা রয়েছে। আপনারা যদি বেসরকারি স্কুলে পড়তে চান সেক্ষেত্রে আপনাদের কি প্রতিমাসে মোটা পরিমাণ অর্থ গুনতে হবে। অর্থাৎ আপনাদেরকে বেতন প্রদান করে তারপর সেই স্কুলগুলোতে আপনাদেরকে পড়তে হবে। আপনারা যদি বেসরকারি স্কুলে পড়তে চান সেক্ষেত্রে প্রতিমাসে আপনাদেরকে ব্যাপক পরিমাণ টাকা খরচ করতে হবে। না হলে কিন্তু আপনারা বেসরকারি স্কুলগুলোতে কিন্তু পড়তে পারবেন না।

কেননা বেসরকারি স্কুলগুলোতে টিচার গুলো থাকে তাদেরকে কোন প্রকার সহায়তা সরকার থেকে করা হয় না। সেই জন্য কিন্তু শিক্ষার্থী যারা আছে তারা কিন্তু স্যারদেরকে বেতন প্রদান করে তারপর সেখানে পড়তে পারে। সেখানে দেখা যায় সেই বেতনের উপর নির্ভর করে একটি প্রতিষ্ঠান যতগুলো কর্তৃপক্ষ রয়েছে সবাই বেতন নেয়। তারপর একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান চালানোর জন্য যাবতীয় খরচ এ বেতন থেকে গ্রহণ করা হয়। এবং কি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের যে ভাড়া বাবদ খরচ আছে সেটাও কিন্তু শিক্ষার্থীদের থেকে আদায় করা হয়।

তো সেই ক্ষেত্রে দেখা যায় যে একজন শিক্ষার্থীকে মাসে 5 থেকে 6 হাজার টাকা ব্যয় করতে হয় শুধুমাত্র স্কুলের বেতন দেওয়ার জন্য। আপনাদের যদি সামর্থ্য থাকে সে ক্ষেত্রে আপনারা দিতে পারবেন। তো 6 থেকে 7 হাজার এটা হচ্ছে একদম নর্মাল স্কুলের বেতন। এর থেকে আপনারা মোটামুটি ভালো মানের স্কুলে পড়তে গেলে দেখা যায় মাসিক 10000 টাকার উপরে খরচ পড়ে যায়। সেটা কিন্তু অনেক বড় পরিমাণের একটা টাকা। তো আপনারা যদি বেসরকারি স্কুলে পড়েন সে ক্ষেত্রে আপনাদের কে সরকারিভাবে বইও দেওয়া হবে না।

যার কারণে কিন্তু আপনাদের কে আলাদাভাবে বইগুলো কিনে নিতে হবে। পাশাপাশি সরকারি বেসরকারি স্কুলে পড়ার কারণে আপনাদেরকে কিন্তু বই গাইড এর পাশাপাশি আরো আলাদাভাবে স্যারের কাছে প্রাইভেট পড়তে হবে। বিভিন্ন কোচিং করতে হবে। সেখানে দেখা যায় যে মোটামুটি আপনাদের মাসিক 15 থেকে 20 হাজার টাকা খরচ হচ্ছে। আপনার সন্তানকে যদি মোটামুটি ভালো মানের একটি বেসরকারি স্কুলে পড়তে চান তাহলে আমি আপনাদেরকে বলবো আপনাদের আশেপাশে যদি কোন সরকারি হাই স্কুল থাকে সে ক্ষেত্রে আপনারা সরকারি হাইস্কুলে পড়বেন।

সরকারি বেসরকারি হাই স্কুলের তুলনা

সরকারি হাই স্কুলের স্টুডেন্ট গুলো একদম বিনামূল্যে স্কুলে পড়তে পারে। এবং কি যে স্যারের রয়েছে এছাড়াও কিন্তু মোটামুটি ভাল পজিশন থেকে আসে। কেননা সরকারের টিচার হতে গেলে ন্যূনতম যোগ্যতা হয় না। সেখানে আপনাদেরকে মাস্টার্স পাস করার পরেও অনেকেই অনেক ক্ষেত্রে বিসিএস ক্যাডার হওয়ার পরে কিন্তু বিসিএস পরীক্ষায় পাশ করার পরে কিন্তু আপনাদের যে টিচার গোলা আছে তারা সরকারি স্কুলের নিয়োগ পায়। সেই ক্ষেত্রে অবশ্যই আমাদের স্কুলে প্রাইভেট এর থেকে ভালো হবে এবং কি আপনাদের খরচ বেঁচে যাবে।

তো আমি আপনাদের রিকমেন্ট করব আপনারা অবশ্যই সরকারি স্কুলে পড়ার চেষ্টা করুন। অথবা আপনি যদি চান সে ক্ষেত্রে বেসরকারি স্কুলে পড়তে পারেন। কেননা তুলনামূলকভাবে বেসরকারি স্কুলগুলোতে একটু চাপ দিয়ে পড়ানো হয়। যার কারণে স্টুডেন্ট গুলো একটু ভালোমতো পরে এই আর কী। তাছাড়া কোন তফাৎ নেই। যারা বিষয়টা বুঝতে পারছেন সরকারি বেসরকারি স্কুলের। বুঝলে আলহামদুলিল্লাহ। এখানে আমার যা বলার ছিল বা আমার যে মত ছিল সেটা আমি আপনাদের সাথে শেয়ার করলাম এখন বাকিটা আপনার ইচ্ছা। আপনারা চাইলে সরকারি হাই স্কুলে পড়তে পারেন।

অথবা চাইলে বেসরকারি স্কুলে পড়তে পারেন। এটা নিয়ে আমাদের বলার মত কিছুই নেই। তবে আমি রিকুমেন্ট করব আপনারা সরকারি স্কুলে পড়েন। যদি আপনাদের কাছে টাকা পয়সা কম থাকে বা আপনার মধ্যবিত্ত পরিবার বা গরিব পরিবারের হয়ে থাকেন সেক্ষেত্রে অবশ্যই সরকারি স্কুল গুলো আপনার জন্য বেস্ট হবে। এবং আপনি যদি ধনীর দুলাল হয়ে থাকেন সেক্ষেত্রে অবশ্যই আপনি বেসরকারি স্কুলে পড়তে পারেন। সেটা আপনার ব্যাপার বা আপনার জন্য ভালো। কেননা আগেই বললাম বেসরকারি স্কুলগুলোতে কিন্তু তুলনামূলকভাবে বেশি প্রেশার দিয়ে স্টুডেন্টদের পড়ানো হয়।

তো এখন আপনি কি করবেন সেটা মূলত আপনার বিষয় তাছাড়া আপনাদের বেসরকারি স্কুলগুলোতে আরো কিছু ফেসিলিটি পাওয়া যায় যেগুলো সরকারি স্কুলে পাওয়া যায়না। তো সব দিক বিবেচনা করে আপনারা সরকারি স্কুল কেউ ভালো বলতে পারেন আবার বেসরকারি কেউ ভালো বলতে পারেন। সেটা আপনার উপর ডিপেন্ড করে। কারণ একেকজনের একেকরকম দেখা যায়। যে সরকারি স্কুলে যে ফ্যাসিলিটি গোলা পাওয়া যায় সেগুলো কিন্তু বেসরকারি স্কুলে পাওয়া যায় না বা বেসরকারি স্কুলে কিছু ফেসিলিটি আছে যেগুলো সরকারি স্কুল পাওয়া যায়না।

তো এসব কিছুর উপর নির্ভর করে যেকোনো একটিকে আপনারা বেস্ট বলতে পারেন। সেটা আসলে নরমালি আমি বললে হবেনা। আপনাদেরকে ভালো করে বিবেচনা করতে হবে। আপনার জন্য কোনটা আপনার জন্য বেস্ট হবে আপনাকল সেটাই করতে হবে। এই ছিল আজকের আলোচনা।

আরো কিছু নতুন ফ্যাক্ট

আরেকটা কথা বলে নেই; সেটা হলো বেসরকারি স্কুলের শিক্ষার্থীদের কে অনুদান দেয়া হয় বা উপবৃত্তি দেওয়া হয়। বৃত্তি দেওয়া হয়। এছাডাও নানান ধরনের সুবিধা গুলো আছে। সেগুলো কিন্তু আপনারা পাবেন। আর দেখা যাবে আপনাদের পরীক্ষার রেজিস্ট্রেশন কিন্তু সরকারি স্কুল থেকে হবে। কারণ বেসরকারি স্কুলগুলোর শিক্ষার্থীদের জন্য পরীক্ষা দেওয়ার কোনো অনুমতি থাকে না। সেজন্যই দেখা যায় যে আপনাদেরকে পরীক্ষা দিতে হবে বেসরকারি স্কুলগুলোর থেকেই সরকারি স্কুলগুলোতে। সেদিক হিসেবে আপনাদের সরকারি স্কুলে পড়া ভালো।

বেসরকারি স্কুল থেকে আর কিছু হলেও আপনারা পরীক্ষাগুলো কিন্তু দিতে পারবে না। পরে পরীক্ষা দেওয়ার জন্য আপনাদেরকে রেজিস্ট্রেশন কিন্তু সরকারি স্কুল থেকেই করানো হবে। আশা করি আজকের আলোচনাটি আপনাদের ভাল লেগেছে। ভালো লাগলো আমাদের সাথে থাকবেন। আজকের আলোচনা এখানেই শেষ করে দিয়েছি। সবাই ভাল থাকুন সুস্থ থাকুন। আসসালামু আলাইকুম।

Categories Uncategorized

Leave a Comment

x