আসসালামুআলাইকুম বন্ধুরা। সবাই কেমন আছেন? আশা করি সবাই ভাল আছেন। মহান আল্লাহর রহমতে আমিও ভাল ও সুস্থ আছি। আজকের এই পর্বে আমরা আলোচনা করব অনার্স ভর্তি পরীক্ষা নিয়ে। অর্থাৎ 2021 সালের অনার্স ভর্তি পরীক্ষা স্থগিত করা হয়েছে কেন এই বিষয়ে আমরা বিস্তারিত আলোচনা করবো। তো বেশি কথা না বলে চলুন শুরু করি আমাদের মূল আলোচনা।
অনার্স লেভেল আসলে কি?
অনার্স হচ্ছে আমাদের লেখাপড়ার একটি সেকশন। যেমন আমাদের পিএসসি পরীক্ষার আগ পর্যন্ত থাকে প্রাইমারি স্কুল, তারপরে হয় আমাদের হাই স্কুল, এবং তারপরে কলেজ। ঠিক একইভাবে ইউনিভার্সিটি লেভেলে প্রথম পড়াশোনার জে লেভেলটি আছে সেটিকে অনার্স বলা হয়। অনার্স পড়াশোনার জন্য আমাদেরকে এইচএসসি বা উচ্চমাধ্যমিক পাশ করার পর অনার্সে ভর্তি হতে হয়। আমরা অনার্সে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে পড়তে পারি। অনার্সে প্রায় সকল বিষয় নিয়ে লেখাপড়া করা যায়। তো তেমনি ভাবে আমরা যখন এইচএসসি বা ইন্টারনেটে লেখাপড়া শেষ করে আমরা বোর্ড পরীক্ষা দেই এবং বোর্ড পরীক্ষা দেওয়ার পর আমাদের রেজাল্ট পাবলিশ হয়। অনার্স ভর্তি পরীক্ষা স্থগিত
তারপর পুরো বাংলাদেশের যতগুলো সরকারি-বেসরকারি এবং জাতীয় এবং পাবলিক ভার্সিটি রয়েছে সেগুলো কিন্তু ভর্তির জন্য সার্কুলার দেয়। আমাদের রেজাল্টের উপর ভিত্তি করে আমরা বিভিন্ন পর্যায়ের কলেজগুলোতে বা ইউনিভার্সিটিগুলোতে আবেদন করতে পারি। আবেদন করার পর আমরা সেখানে লিখিত পরীক্ষা এবং ভাইভা পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে কলেজগুলোতে ভর্তি হতে পারি। এটা সম্পূর্ণ নির্ভর করে আমাদের রেজাল্ট এবং আমাদের দক্ষতার উপর। আমাদের রেজাল্ট খারাপ হলে কিন্তু আমরা ভালো মানের ইউনিভার্সিটি তে যেমন পাবলিক ইউনিভার্সিটি তে কিন্তু ভর্তি হতে পারবো না। সে জন্য আমাদেরকে জাতীয় ইউনিভার্সিটি গুলোতে ভর্তি হতে হবে। তো সেজন্য আমাদেরকে ভালোভাবে পড়াশোনা করতে হবে এবং ভাইভার জন্য প্রস্তুতি নিতে হবে। তাহলে কিন্তু আমরা অনার্স লেভেলে কোন কলেজে ভর্তি হতে পারবো।
এই বছর অনার্সে কারা ভর্তি হবে?
2020 সালে যারা এসএসসি বা ইন্টারমিডিয়েট পরীক্ষা দিয়েছে তারাই কিন্তু এই বছর অর্থাৎ 2021 সালে অনার্সে ভর্তি হবে। আমরা সবাই জানি যে এই বছর ভর্তি এখনো নেওয়া হয়নি বা বলতে পারেন যে প্রায় এক বছর পেরিয়ে যাওয়ার পরেও কিন্তু 2020 সালের শিক্ষার্থীরা অনার্সে ভর্তি হতে পারছে না। বলতে পারেন যে কোন জায়গাতেই ভর্তি হতে পারছে না। কেননা সব জায়গা সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান কিন্তু বর্তমানে বন্ধ রয়েছে। আমরা যদি অতীতের দিকে তাকাই তাহলে দেখতে পারবো গত 15 মাস যাবত আমাদের স্কুল কলেজ ইউনিভার্সিটি সহ সমস্ত প্রকার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো বন্ধ করে রাখা হয়েছে।
এমন অবস্থায় কিন্তু শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো খোলা কোনভাবে সম্ভব না। যার কারণে কিন্তু আমাদের যে গত বছরের এইচএসসি পরীক্ষার্থীরা আছে তারা কিন্তু এবছর এখন পর্যন্ত কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে পারেনি। সেটা মেডিকেল হোক অথবা জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় হোক বা পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় হোক না কেন। কোন জায়গাতেই কিন্তু ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয় নি বা হতে পারতেছে না। কেননা বর্তমানে যে করোনা সংক্রমণের হার সেটার উপর নির্ভর করে কিন্তু বর্তমানে স্কুল-কলেজসহ কোন প্রকার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়া কোনভাবেই সম্ভব নয়। অনার্স ভর্তি পরীক্ষা স্থগিত
কেননা করোনা যদি 5 পার্সেন্ট এর নিচে না নামে অর্থাৎ করনা সংক্রমণের হার 5 পার্সেন্ট এর নিচে নামলে কিন্তু স্কুল-কলেজ করবা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো কোনভাবেই খুলে দেওয়া সম্ভব হবে না বলে জানিয়েছেন আমাদের শিক্ষা মন্ত্রী। এসব কথা বিবেচনা করে দেখা যাচ্ছে যে যদি স্কুল কলেজ ইউনিভার্সিটি খোলা না যায় সেই ক্ষেত্রে কিন্তু আমাদেরকে কোনোভাবেই অনার্স লেভেলে ভর্তি হওয়ার সুযোগ দেওয়া হবে না। কেননা স্কুল-কলেজ না খুললে আমাদেরকে ভর্তি পরীক্ষা নেওয়া যাবে না। যার কারণে কিন্তু আমরা কোন ইউনিভার্সিটি তে ভর্তি হওয়ার সুযোগ পাচ্ছিনা।
এখন দেখা যাচ্ছে 2020 সালের এইচএসসি পরীক্ষার্থীরা কিন্তু ঝুলে আছে মাঝখানে। অর্থাৎ তারা এখনো কোন কলেজে ভর্তি হতে পারেনি। আবার এই দিকে দেখা যাচ্ছে যারা 2021 সালের পরীক্ষার্থী ছিল তারাও কিন্তু এই বছর এসএসসি পরীক্ষা দিতে পারেন নাই। এইচএসসি পরীক্ষা দেওয়ার সময় পেরিয়ে ও কিন্তু আরও পাঁচ মাস পেরিয়ে গেছে। যার কারণে দেখা যাচ্ছে যে এখনকার যে এসএসসি পরীক্ষার্থীরা রয়েছে তারা কিন্তু এই সময় অনার্স লেভেলে ভর্তি হওয়ার কথা ছিল কিন্তু সেটা প্রায় এক বছর পিছিয়ে 2020 সালের পরীক্ষার্থীরা কিন্তু এই বছর অনার্স লেভেলে ভর্তি হচ্ছে।
সুতরাং এ থেকে বোঝা যাচ্ছে যে 2021 সালের এসএসসি পরীক্ষার্থীরা রয়েছে তারা কিন্তু ভর্তি হতে হতে 2022 সাল নাগাদ পৌছে যাবে। এর মানে হচ্ছে আমাদের কিন্তু পুরো একটি বছর শিক্ষা ব্যবস্থায় খাত থেকে গেল এবং এটা কিন্তু ধীরে ধীরে আরও বেড়ে চলেছে। কেননা বর্তমানে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলার কোনো লক্ষণ আমরা দেখতে পাচ্ছি না এবং করোনা ঊর্ধ্বগতির কারণে কিন্তু সারাদেশের শাটডাউন দেয়া হয়েছে। আর শাটডাউন মানে হচ্ছে খুবই জরুরি কোনো প্রয়োজন ছাড়া কেউ ঘর থেকে বাইরে বের হতে পারবে না বা বলতে পারেন যে সবাইকে গৃহবন্দী করে রাখা হয়েছে। অনার্স ভর্তি পরীক্ষা স্থগিত
অনার্সে কারা ভর্তি হবে?
শুধুমাত্র মেডিকেল সামগ্রি, কাঁচাবাজার এবং এই জাতীয় দ্রব্যাদি ছাড়া সমস্ত প্রকার প্রতিষ্ঠানে দোকানপাট বন্ধ থাকবে। পুরো বাংলাদেশের শাটডাউন দেওয়া হবে খুব শীঘ্রই বলে জানিয়েছেন সরকার কর্তৃপক্ষ। এ ছাড়া আসলে আর কোন উপায় নেই। কেননা আমাদেরকে যদি করোনা নিয়ন্ত্রণে রাখতে হয় সেই ক্ষেত্রে কিন্তু অবশ্যই আমাদেরকে শাটডাউন দেওয়া দরকার। আমরা দেখতে পাচ্ছি বর্তমানে যে লকডাউন চলছে এই লকডাউন কিন্তু খুব বেশি কার্যকর হচ্ছে না। যার কারণে সরকার বিকল্প পদ্ধতি হিসেবে শাটডাউনের চিন্তাভাবনা করছে এবং শাটডাউন দেয়া হলে কিন্তু সমস্ত প্রকার প্রতিষ্ঠানগুলো বন্ধ হয়ে যাবে। অতি প্রয়োজনীয় দ্রব্যাদি ছাড়া কোন কিছুই চলবে না।
এখান থেকে বুঝা যাচ্ছে যে আগামী কয়েক মাসের ভেতর স্কুল কলেজ খোলার কোনো সম্ভাবনা নেই। এবং এই সকল কারণে কিন্তু আমাদের ইউনিভার্সিটিগুলো বন্ধ রয়েছে৷ যার কারণে ইউনিভার্সিটিগুলোতে ভর্তি পরীক্ষা নেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। 2020 সালের এইচএসসি পরীক্ষার্থীদের কিন্তু মাঝখানে ঝুলে থাকতে হচ্ছে। কেননা তাদেরকেও ভর্তি পরীক্ষা শেষ করে তাদের প্রায় একবছর অনার্সের শেষ হয়ে যেত কিন্তু তারা কিন্তু এখনো ভর্তি হতে পারেনি এবং 2021 সালের যারা পরীক্ষার্থী রয়েছে তারা কিন্তু এখনও তাদের এইচএসসি পরীক্ষা দিতে পারেনি। অনার্স ভর্তি পরীক্ষা স্থগিত
যার কারণে তারা ভর্তি হতে তো পারবেই না এমনকি তাদেরও কিন্তু সম্পূর্ণ একটি বছর লস হয়ে যাচ্ছে। আশা করি সরকার খুব শীঘ্রই এদেরকে নিয়ে ভালো কোনো সিদ্ধান্ত দেবে সরকার। সেখান থেকে হয়তো কোনো বিকল্প পদ্ধতিতে এদেরকে উত্তীর্ণ করা হবে বা ভর্তি করা হবে। যার কারণে কিন্তু আমরা সবাই একটি ভাল দিক দেখতে পারবো। কিন্তু যদি আমাদের কে উত্তির্ন করে দেওয়া না হয় এবং ভর্তি পরীক্ষার কোনভাবে ব্যবস্থা না করা হয় সেই ক্ষেত্রে কিন্তু বড় ধরনের একটি সমস্যার সম্মুখীন হতে হবে।
আমাদেরকে উত্তির্ন না করে দিলে মানে 2021 সালের শিক্ষার্থীদের উত্তীর্ণ করে দিলে কিন্তু 2020 সালের শিক্ষার্থী এবং 2021 সালের শিক্ষার্থীদের কিন্তু একই লেভেলের যেতে হবে। তারা সবাইকে একই শ্রেণিতে অর্থাৎ দুইটি শ্রেণীর মিলিত হয়ে একটি শ্রেণীতে পরিণত হবে। যেটা কিন্তু অবশ্যই একটি বিশাল সমস্যার কারণ হবে। কেননা বর্তমানে জে এসএসসি পরীক্ষার্থীরা রয়েছে যারা পাস করে বেরিয়েছে তাদের সংখ্যার থেকে কিন্তু সিট বা কলেজগুলোতে সিটের সংখ্যা তুলনামূলক কম। ঠিক একইভাবে আপনি যদি চিন্তা করেন যে বর্তমানে 2021 সালের এসএসসি পরীক্ষার্থীর তো আছেই। তারপরে আবার 2020 সালের এসএসসি পরীক্ষার্থী 2021 এ পরিণত হবে। অনার্স ভর্তি পরীক্ষা স্থগিত
তখন চিন্তা করে দেখেন আপনি, যে কি পরিমান সিটের প্রয়োজন হবে। যে পরিমাণ সিটের প্রয়োজন হবে সেই পরিমাণ সিট বাংলাদেশের বিশ্ববিদ্যালয় গুলো আছে সেগুলো সবগুলো মিলিয় এনাফ হবে না। অর্থাৎ দেখা যাবে যে অর্ধেক শিক্ষার্থীদের সিট হবে না। তাই এক্ষেত্রে অবশ্যই সরকার কোনো না কোনো ব্যবস্থা আস্যই নেবে। কারণ এতগুলো শিক্ষার্থীকে অবশ্যই ঝুঁকির মধ্যে ফেলবে না। তো যাই হোক এটা সম্পূর্ণ সরকারের উপর নির্ভরশীল। সরকার কি করবে না করবে আমরা শুধু দেখে যাবে এবং আশা করি সরকার আমাদেরকে নিয়ে ভালো সিদ্ধান্তই দেবে। কেননা শিক্ষার্থীরাই হচ্ছে আগামী দিনের ভবিষ্যৎ।
বিকল্প পদ্ধতি কি করা যেতে পারে?
বর্তমানে যে পরিস্থিতি সেটার উপর নির্ভর করে বলা যাচ্ছে না যে বিকল্প পদ্ধতি কি করা উচিত। কেননা বর্তমানে সমস্ত প্রকার শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ। তো এখানে ক্লাসে উপস্থিত হয়ে ক্লাস করা কোনভাবেই সম্ভব নয় এবং স্কুল-কলেজে খুলে দেবে এরকম পরিস্থিতি অবর্তমানে বিরাজ করছে না। যার কারণে কিন্তু স্কুল কলেজ না খোলার কারণে সমস্ত প্রকার পাবলিক পরীক্ষা গুলো আটকে আছে এবং কি ভর্তি পরীক্ষা স্থগিত করা হয়েছে। মাঝখানে কয়েকবার নোটিশ আসলেও ভর্তি পরীক্ষা কিন্তু আবারো স্থগিত করে দেওয়া হয়েছে। যার কারণে ভর্তি পরীক্ষা নেওয়া কোনভাবেই সম্ভব হচ্ছে না। বিকল্প পদ্ধতি হিসেবে অনলাইনে এমসিকিউ এর ব্যবস্থা করা যেতে পারে।
অর্থাৎ অনলাইনে গভমেন্ট ওয়েবসাইট বানিয়ে এমসিকিউ এর ব্যবস্থা বা নৈব্যত্তিক অথবা সংক্ষিপ্ত প্রশ্নের উত্তরের মাধ্যমে একটি ব্যবস্থা করা যেতে পারে। যদিও এটি মূল্যায়ন করা খুবই কঠিন হবে। কেননা অনলাইনভিত্তিক পরীক্ষা গুলো কেমন হবে সেটা আমরা বুঝতে পারি। আর দ্বিতীয়তঃ অপশন হচ্ছে অ্যাসাইনমেন্ট। তবে অ্যাসাইনমেন্ট অপশনটি একটু জটিল প্রকৃতির। কেননা অ্যাসাইনমেন্ট পদ্ধতিতে অবশ্যই অবশ্যই শিক্ষার্থীদের বাড়িতে বসে দিতে হবে এবং সেটা কলেজে গিয়ে সাবমিট করে আসতে হবে। সেখানে কিন্তু একটি অসৎ উদ্দেশ্যে স্থান থেকে যায়। কারণ সব শিক্ষার্থী তো আর এক না। বাসায় বসে পরীক্ষা দিলে শিক্ষার্থীরা কি করতে পারে সেটা আমাদের সবারই জানা আছে। অনার্স ভর্তি পরীক্ষা স্থগিত
এসব কথা চিন্তা ভাবনা করে মনে হয় যে অনলাইন ভিত্তিক কোন একটা ব্যবস্থা নিলে, যেমন অনলাইনে mcq অপশনটি রাখলে এবং এটার মাধ্যমে পরীক্ষা নিলে কিন্তু অনেক অনেক বেটার হবে। কেননা এটার মাধ্যমে মোটামুটি ভাবে একটু আয়তো যাবে যেই মেধা কতটুকু আছে। যেমন 100 নৈবিত্তিক দিয়ে 100 মিনিট সময় দেওয়া হবে। অর্থাৎ প্রতি নৈবিত্তিক এর জন্য এক মিনিট দেওয়া হবে। এটা কিন্তু অনেক ভালো হবে বর্তমান পরিস্থিতি হিসেবে। কেননা এসাইনমেন্ট দিলে চান্স থাকে ডুপ্লিকেট করার। কিন্তু নৈব্যক্তিক এ প্রতিটাতে তাদের জন্য এক মিনিট দিলে সেখানে কিন্তু আর কোনো কথা বলার চান্স থাকে না বা খুঁজে বের করবে এরকম সময় পাওয়া যাবে না। যার ফলে মোটামোটি ভাবে জ্ঞান বা দক্ষতা যাচাই করা যেতে পারে। আমরা আমাদের আজকের আলোচনা এখানেই শেষ করছি। সবাই ভাল থাকবেন সুস্থ থাকবেন। আসসালামু আলাইকুম।