১০ম শ্রেণির ২য় সপ্তাহের বিজ্ঞান অ্যাসাইনমেন্ট সমাধান ২০২২

১০ম শ্রেণির ২য় সপ্তাহের বিজ্ঞান অ্যাসাইনমেন্ট সমাধান ২০২২ নিয়ে আসলাম

শিরোনাম: বিভিন্ন প্রকার তন্তু ও এর ব্যবহার

কাপড় তৈরীর জন্য প্রয়োজনীয় দশটি তন্তুর তালিকা তৈরি করে শ্রেণীবিন্যাসকরণ:

আমাদের পাঁচটি মৌলিক চাহিদার মধ্যে অন্যতম হলো বস্ত্র বা কাপড় আর এই বস্ত্র তৈরির প্রধান উপাদান হচ্ছে তন্তু নিম্নে কাপড় তৈরীর জন্য প্রয়োজনীয় দশটি তন্তু তালিকা তৈরি করে শ্রেণীবিন্যাস করা হলো

তন্তুর তালিকা :

  1. তোলা
  2. পাট
  3. রেশম
  4. পশম
  5. অ্যাসবেস্টস
  6. দাতব্য তন্ত
  7. রেয়ন
  8. ভিসকোস রেয়ন
  9. নাইলন
  10. পলিস্টার

 

তন্তর শ্রেণীবিভাগ

১০ম শ্রেণির ২য় সপ্তাহের বিজ্ঞান অ্যাসাইনমেন্ট সমাধান ২০২২

উদাহরণসহ তন্তু থেকে সুতা তৈরি:

 

যেকোনো ধরনের জুতা তৈরীর প্রধান ধাপ হলো তন্ত্র সংগ্রহ। তন্তর উৎস অনুযায়ী সেগুলো ভিন্ন ভিন্ন হয়। যেমন তুলার বেলায় গাছ থেকে কার্পাস ফল সংগ্রহ করে, বীজ থেকে তুলা আলাদা করে ফেলা হয়। এই প্রক্রিয়ার নাম হল জিনিং। জিনিং প্রক্রিয়ায় পাওয়া তন্তুকে বলে কটন লিন্ট। অনেকগুলো কটন লিন্ট একসাথে বেঁধে গাঁট তৈরি করা হয়। এই গাঁট থেকেই স্পিনিং মিলে সুতা কাটা হয়।

১০ম শ্রেণির ২য় সপ্তাহের বিজ্ঞান অ্যাসাইনমেন্ট সমাধান ২০২২

পাট বা পাট জাতীয় যেমন (শন, তিসি ইত্যাদি) গাছ থেকে একই পদ্ধতিতে তন্তু সংগ্রহ করা যাবে না। কারণ এক্ষেত্রে বীজ থেকে তন্তু সংরক্ষণ করা হয় । তন্তু সংগ্রহ করা হয় সরাসরি গাছের বাকল থেকে। এজন্য গাছ কেটে পাতা জড়ানো জন্য প্রথমে কয়েকদিন মাঠেই একসাথে জড়ো করে রাখা হয়। এতে সাধারণত পাঁচ থেকে আট দিন সময় লাগে। এলাকাভেদে জোর করে রাখা গাছকে চেল্লা বা পিল বলে। এভাবে জোড় করে রাখার ফলে উদ্ভিদের পাতায় পচন ধরে। তাই একটু ঝাকুনি দিলেই সেগুলো গাছ থেকে আলাদা হয়ে যায়। তবে খেয়াল রাখতে হবে গাছের পাতা যেন পুরোপুরি পচে না যায়। তখন পচা পাতা গাছের গায়ের সাথে লেগে যায় যা সরানো কষ্টসাধ্। পাতা জড়ানোর পর গাছ গুলো একসাথে আঁটি বেঁধে 10 থেকে 15 দিন পানিতে ডুবিয়ে পচানো হয়। পচে গেলে খুব সহজেই গাছ থেকে আশ বা তন্ত আলাদা করা যায়। গাছ থেকে আলাদা করে পানিতে ধুয়ে সেগুলো রোদে শুকানো হয়। শুকান আশ একত্রিত করে গাট বা বেল বাধা হয়। এই গাঁট বা বেল সুতা কাটার জন্য স্পিনিং মিলে নেয়া হয়।

১০ম শ্রেণির ২য় সপ্তাহের বিজ্ঞান অ্যাসাইনমেন্ট সমাধান ২০২২

এবার প্রাণের তন্ত্র কিভাবে সংরক্ষণ করা হয় সেটা দেখা যাক। রেশমি সুতা তৈরি হয় রেশম তন্তু থেকে। এক্ষেত্রে সরাসরি সুতা উৎপাদন হয়।অন্য কোন প্রক্রিয়ার দরকার হয়না। কৃত্রিম তন্তুর বেলাতেও কিন্তু রেশম তন্তুর মত সরাসরি সুতা তৈরি হয়। কিন্তু উল বা পশমি সুতার জন্য দরকারি প্রাণিজ তন্ত্র অর্থাৎ প্রাণিজ পশম লোম বা চুল। এগুলো সংগ্রহ করা হয় বিভিন্ন প্রাণীর শরীর থেকে কেটে নিয়ে। এভাবে প্রাণীর দেহ থেকে লোম পশম চুল কেটে নিলে কি তাদের বড় ধরনের ক্ষতি হয়? আসলে তেমন কোন ক্ষতি হয়না। পশম বা লোম কেটে নেওয়ার পর কিছুদিন এর মধ্যেই আবার লোম গজায়। যা বড় হলে আবার কেটে সংগ্রহ করা হয়। একই পশুর গা থেকে বারবার পশম সংগ্রহ করা যায়। এভাবে সংগ্রহ করা পশম লোম বা চুলকে ফ্লিস  উল বলা হয়। এই ফ্লিস উল বস্তায় করে সুতা কাটার জন্য স্পিনিং মিলে আনা হয়।

রেশম তন্তু থেকে সুতা তৈরি প্রবাহ চিত্র অংকন:

১০ম শ্রেণির ২য় সপ্তাহের বিজ্ঞান অ্যাসাইনমেন্ট সমাধান ২০২২

চিত্র: রেশম তন্তু থেকে সুতা তৈরি

রেশম পোকা থেকে তৈরি হয় এক ধরনের গুটি। একে কোকুন(cocoon) বলে। পরিণত কোকুন বা গুটি সাবান পানিতে লোহার কড়াইয়ে সেদ্ধ করা হয়  এতে কোকুনের ভেতরকার রেশম পোকা মরে যায়। এবং গুটি কেটে বের হয়ে রেশমের গুটি নষ্ট করতে পারে না। সিদ্ধ করার কারণে কোকুন নরম হয়ে যায় এবং ওপর থেকে খোসা খুব সহজেই আলাদা হয়ে যায়। খোসা উঠে গেলে রেশমি তন্তর প্রান্ত বা নাল পাওয়া যায়। এই নাল ধরে আস্তে আস্তে টানলে লম্বা সুতা বের হয়ে আসে। চিকন বা মিহি সুতার জন্য পাঁচ থেকে সাতটি কোকুন নাল আর মোটা সুতার জন্য 15 থেকে 20 টি কোকুনের নাল একত্রে করে টানা হয়। এ কাজের চরকা ব্যবহার করা হয়। নাল গুলো একত্রিত করলে এদের গায়ে লেগে থাকা আঠার কারণে একটি আরেকটির সাথে লেগে গিয়ে সুতার গোছা তৈরি হয়।

১০ম শ্রেণির ২য় সপ্তাহের বিজ্ঞান অ্যাসাইনমেন্ট সমাধান ২০২২

পরিবেশের ভারসাম্য হীনতার রাবার ও প্লাস্টিকের ভূমিকা

বেশিরভাগ প্লাস্টিক এবং কৃত্রিম রাবার পচনশীল নয়। এর ফলে পূর্ণ ব্যবহার না করে বজ্য হিসেবে ফেলে দিলে এগুলো পরিবেশে জমা হতে থাকে। এবং নানান রকম প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে।ঢাকা বা অন্যান্য শহরের বেশিরভাগ নর্দমার নালায় প্রচুর প্লাস্টিক বা রাবারের জাতীয় জিনিস পড়ে থাকে। এগুলো জমতে জমতে এক পর্যায়ে নালা-নর্দমা বন্ধ হয়ে পানির প্রবাহ বন্ধ হয়ে যায়। ফলে দেখা যায় সামান্য বৃষ্টিপাত হলেই রাস্তায় পানি জমে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়। যা পরিবেশের ভারসাম্য নষ্ট করে। একইভাবে প্লাস্টিক এবং বর্জ্য পরিকল্পিত উপায়ে ব্যবস্থাপনা না করায় এর বড় একটি অংশ নদনদী বা জলাশয় গিয়ে পড়ে। এভাবে জমতে থাকতে থাকতে একসময় নদীর গভীরতা কমে যায়। যা নাব্যতার জন্য মারাত্মক হুমকি হয়ে দাঁড়ায়। আবার ফেলে দেয়া প্লাস্টিক বা রাবারের বজ্য অনেক সময় মাটিতে থাকলে তা মাটির উর্বরতা নষ্ট করতে পারে। ফেলে দেয়া এসব বর্জ্য অনেক সময় গরু, ছাগ,  ভেড়া ইত্যাদি পশুর খাবারের সাথে মিশে তাদের পাকস্থলীতে যায়। এবং এক পর্যায়ে সেগুলো মাংস ও চর্বিতে জমতে থাকে। এমনকি নদ-নদী খাল-বিল এ ফেলে দেয়া প্লাস্টিক বা রাবারের বর্জ্য খাবার গ্রহণের সময় মাছের দেহে প্রবেশ করতে পারে।। এবং সেখানে জমা হতে থাকে। আমরা সেই মাছ মাংস খেলে শেষ পর্যন্ত সেগুলো আমাদের দেহে প্রবেশ করে। যা ক্যান্সারের মতো মারাত্মক রোগ সৃষ্টি করতে পারে। তাহলে এটি স্পষ্ট যে প্লাস্টিক ও রাবার সামগ্রী সঠিক ব্যবস্থাপনার না করলে তা মারাত্মক পরিবেশ বিপর্যয় ঘটে পরিবেশের ভারসাম্য নষ্ট করতে পারে। তাই প্লাস্টিক আর রাবার সামগ্রী যতবার সম্ভব নিজেরা পুনরায় ব্যবহার করতে হবে। এবং অন্যদেরও ব্যবহারে উদ্বুদ্ধ করতে হবে। ব্যবহার অনুপযোগী হয়ে পড়লে যেখানে-সেখানে ফেলে না দিয়ে একসাথে জড়ো করে রাখতে হবে। এতে জড়ো করার সামগ্রী বিক্রি করা যায়। এতে একদিকে যেমন পরিবেশ সংরক্ষিত হয় অন্যদিকে তেমনি অর্থনৈতিকভাবে লাভবান হওয়া যায়  বিক্রি করার সুযোগ না থাকলে এটি যথাযথ কর্তৃপক্ষের কাছে পৌঁছে দিতে হবে।

Categories Uncategorized

Leave a Comment

x